স্বপন কুমার ঢালী: মোরে ওম্মে নিস না, মুই ওম্মে যামু না, তোরা মোরে খাওন দ্যাও। এ কথাগুলো বলছিল ষাটোর্দ্ধ সুরিয়া বেগম । তিনি সুরিয়া পাগলী নামে পরিচিত ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বরগুনার বেতাগী পৌর শহরের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় অফিসের সামনে পরিত্যাক্ত অন্ধকার গলিতে পড়ে রয়েছে। কেহ খাবার দিলে খায়, আবার খাবার না পেলে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া ময়লা ও আর্বজনাযুক্ত পঁচা খাবার কুঁড়িয়ে কুঁড়িয়ে খেয়ে জীবন যাবন করতো সুরিয়া। কোন কোন দিন না খেয়েও থাকতো। এভাবে পরিত্যাক্ত অন্ধকারে পলিথিন মুড়ি দিয়ে কোন রকম জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতো । পরনের কাপড়ের কোন ঠিক ঠিকানা ছিল না। কোথাও পড়ে গিয়ে বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। পঁচন ধরে ক্ষতে সৃষ্টি হয়েছে। সুরিয়া পাগলীর বাড়ি ঘর কোথায় কেউ তা বলতে পারে না। সংবাদ কর্মীরা জিজ্ঞাসা করলে সঠিকভাবে কিছু বলতে পারে না। লোকজন দেখার ভিড় করলে মাঝে মধ্যে বলে তোরা মোরে খাওন দ্যাও। গুনগুন করে গানও করে তা স্পষ্ট কিছুই বোঝা যায় না।
আজ শুক্রবার ( ৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে। সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পৌর মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির ও উপজেলা নির্বাহী মো. সুহৃদ সালেহীন এর নেতৃত্বে যুব রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বেতাগী উপজেলা ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবকদের টিম নিয়ে পরিত্যাক্ত অন্ধকার গলি থেকে পাগলীটা বের করে বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। নতুন কাপড়-চোপড় কেনা ও সার্বক্ষণিক দেখানোর জন্য এক আয়াকে পৌর মেয়র নগদ দুই হাজার টাকা অর্থ প্রদান করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘দীর্ঘদিন একটা অন্ধকার গলিতে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা জীবনযাপন করছে, দেরিতে হলেও তাঁর
পুনর্বাসন হয়েছে। এ উপজেলায় আর যেন কেউ এমন মানবতার জীবনযাবন না করে তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির বলেন,’ মানবতার জীবনযাপন ও ঠিকানাবিহীনদের এভাবে খুঁজে খুঁজে পুনর্বাসনের ধারা অব্যাহত থাকবে।’
Leave a Reply