স্বপন কুমার ঢালী, বেতাগী (বরগুনা): বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল, স্বাধীনতার স্থাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিকশিত আওয়ামী লীগের নৌকায় ঠাঁই পেয়েছেন বহু বিচক্ষণ ও বরেণ্য রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব। মুজিব আদর্শের সেই বরগুনা ও বেতাগীর গর্ব, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন শিক্ষাবিদ ও শেখ হাসিনার সংগ্রামী সময়ের একনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন দলীয় নেতাদের অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা , বরেণ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষাবিদ ড. আবুল হোসেন সিকদার ২০১৬ সালের ২২ জুলাই বরিশারের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিমে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী।
সাংগঠনিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ড. আবুল হোসেন সিকদার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৪ সালে বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের সিকদার বাড়িতে আবুল হোসেন সিকদার জন্মগ্রহণ করেণ। তৎকালীন বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আলহাজ্ব জাহঙ্গীরের হাত ধরেই আবুল হোসেন সিকদারের ছাত্র রাজনীতিতে হাতে খঁড়ি।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি তৎকালীন আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী এবং জনপ্রিয় রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জন্মস্থান বেতাগীবাসীর সুখ-সমৃদ্ধি আর স্থানীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে আজীবন তিনি স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিবেদিত ছিলেন। ছাত্র জীবনে বর্তমান আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ একাধিক সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্র রাজনীতিতে একজন পরীক্ষিত নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে সর্ব মহলে সুশীল সমাজে পরিচিত এই রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । এছাড়া তিনি প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে মানসম্মত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র বিস্তারে তার ছিল অনন্য ভূমিকা।
একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আবুল হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সীমিত আকারে আয়োজিত এক আলোচনায় বিশিষ্ট এই রাজনীতিক ও শিক্ষাবিদ সম্পর্কে তাঁর সুযোগ্য সন্তান বরগুনা জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান ও বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী সদস্য নাহিদ মাহমুদ হোসেন লিটু বলেন,’ এলআইপি ও দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান থাকা অবস্থায়, এলাকাবাসীর কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করে দেবার জন্য এখনও বাবার সুখ্যাতির কথা মনে করে আবেগ আপ্লুত হন বেতাগীবাসী। বিশেষ করে ‘৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকালে সংগ্রামের এক সাহসী ভূমিকা পালন করেন তিনি। ‘
জানা গেছে, ৭৫ এর ১৫ই আগষ্টের পর জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে ও আওয়ামী লীগের পুনঃসংগঠিত হয়ে ওঠার লড়াইয়ে অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন আবুল হোসেন সিকদার । ‘৭৫ পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক শাখার সভাপতি ছিলেন। পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মোহন আর সেই কমিটিতে, প্রথমে ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য হিসেবে ক্যাম্পাসে-রাজপথে সর্বত্র একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন সিকাদার।
পরবর্তীতে খলিলুর রহমান মোহন ১ম বার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে সময় হল শাখার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ছিলেন ড. আবুল হোসেন সিকদার এবং পরবর্তীতে হল শাখার সমাজসেবা সম্পাদকও নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্যপদ লাভ করেন তিনি। সেখান থেকে পরবর্তী প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের মধ্যদিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের পাশাপাশি বরগুনার মাটিতে দলের এক অন্যতম আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন ড. আবুল সিকদার।
আওয়ামী লীগের আদর্শবান একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে সাফল্যের শিখরেে স্পর্শ করেছিলেন। তাঁর সুকীর্তির মানদন্ডে এ উপকূলীয় জনপদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল।
Leave a Reply