হাফেজ মুফতি জাহিদুল ইসলাম বেলাল : শাওয়ালা মাসের ছয়টি রোজার মাধ্যমে রমজানের রোজার শুকরিয়া আদায় করা হয়। যখন কোনো বান্দার আমল আল্লাহ কবুল করেন, তখন তাকে অন্য নেক আমলের তাওফিক দেন। সুতরাং এ রোজাগুলো রাখতে পারা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার সুলক্ষণও বটে। রসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এ রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কিরামদের রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল। ’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস ৮২২)।
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কিরাম বলেন, রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে কোরআনুল কারিমে। সূরা আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি একটি পুণ্য কাজ করল, সে ১০ গুণ সাওয়াব পাবে। ’ এ হিসাবে যে ব্যক্তি রমজানের এক মাস রোজা রাখল, আর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখে তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০টি রোজার সমান। অর্থাৎ সারা বছর রোজা রাখার সমান সাওয়াব হবে। সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা। ’ (নাসায়ি শরিফ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা. ১৬২)। হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখ এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখ, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। ’ (তিরমিজি শরিফ, খণ্ড, ১ পৃ. ১৫৭)।
এই করোনাভাইরাসের এ মহামারীতে আমাদের ৩০টি রোজা রাখার তাওফিক দিয়েছেন এখন আমরা শাওয়ালের ছয়টি নফল রোজা আদায় করি। মহান আল্লাহ আমাদের কবুল করুক।আমিন।
Leave a Reply