এম.এস রিয়াদঃ নোভেল করোনা-১৯ ভাইরাসে বিশ্ব আজ নিরব ও নিস্তব্দ। পৃথিবী যেনো হাফ ছেড়ে একটু থমকে দাঁড়িয়েছে। দৈনিক হাজারো মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। বিশ্বে মৃত্যুর মিছিল চলছে। দিন যত গড়াচ্ছে ততোই যেনো করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। অসাবধানতায় চলাফেরা ও অপরিষ্কারকে দায়ী করছেন চিকিৎসা গবেষকরা। তারা বলছেন আতঙ্কিত না হয়ে সামাজিক দুরত্বতা বজায় রেখে সচেতনতার সাথে চলাফেরা করলেই এই মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। সেই সাথে ঘর থেকে অহেতুক বের না হওয়ারও আহ্বান জানান তারা।
সরকার বলছেন কর্মহীন হয়ে পড়া সকল ঘরে ঘরে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পৌঁছে দিবেন খাদ্য সামগ্রী। সেই সাথে বিত্ত্ববানদের এসকল কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। করোনা শুরুর প্রথম দিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো এগিয়ে এলেও বর্তমানে অনেক পরিবারই তিন বেলার জায়গায় এক বেলা খেয়ে কাটাচ্ছেন। অল্পকিছু খাদ্য সংগ্রহ করতে অনেকের দ্বাড়েই ঘুড়ে বেড়ান এসকল অসহায় পরিবারগুলো। সে যে কারোর থেকে ত্রাণ পেয়েছে কি না, তার প্রমান দিতেই আর খাদ্য সামগ্রী জোটেনা ওই ব্যক্তির ভাগ্যে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন। জেলা প্রশাসন থেকে সঠিকভাবে ত্রাণ সামগ্রী বিভিন্ন পরিবার তথা ব্যবসায়ীক সংগঠনের মাধ্যমে হাতে তুলে দিলেও ইউনিয়ন, পৌরসভা থেকে সঠিকভাবে খাদ্য পৌঁছাচ্ছেনা অসহায় মানুষগুলো হাতে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা গেছে চাল চুরির অভিনব সব ঘটনার চিত্র।
দৈনিক খেটে খাওয়া মানুষগুলোর পাশাপাশি মধ্যবিত্ত্ব পরিবারগুলোও হয়ে পড়ছে নিরুপায়। তারা বলছে দুই থেকে তিন দিনের খাবারে দিনের পর দিন কিভাবে চলা যায়? অন্যদিকে প্রবাসীদের কাজ না থাকায় হিমসিম খেতে হচ্ছে তাদের পরিবারকে। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের কাজ না থাকায় বসে থাকতে হচ্ছে তাদের। বাড়িতে টাকা পাঠাতে না পেরে তাদের পরিবারগুলো করুণ অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। দক্ষিণ বড়ইতলা আইডিয়াল কলেজ সংলগ্ন সৌদি প্রবাসী রাকিব জানান, আমার পিতা একজন রিক্সা চালক। আমি বিদেশে এসেছি দেড় বছরের মতো। দুই মাস ধরে বেতন পাচ্ছিনা। বাড়িতে টাকাও পাঠাতে পারিনা। আমার পরিবার খুব কষ্টে রয়েছে। আমার সাথে যারা রয়েছে, তাদেরও একই হাল। পৌর শহরের এক নং ওয়ার্ডের কিছু অসহায় পরিবার খাদ্য সামগ্রী পেলেও উকিল পট্টির মুক্তিযোদ্ধা ভবন সংলগ্ন এলাকাটিতে মেয়র কর্তৃক দুই দিনের খাদ্য পেয়েছে মহামারির শুরুর দিকে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এনআইডি কার্ড জমা দিয়ে পনের দিনেও কোন সাড়া পাননি অনেকেই। রিক্সা চালক রুহুল আমিন, ডেকোরেটর অপারেটর কবির, চটপটি বিক্রেতা ছগির, স্বামী হারা রুসিয়া বেগম, ভাঙ্গারি বিক্রেতা শিল্পী বেগম, ঝি এর কাজ করা পারভীন, বিলকিস, রেশমা, ময়না এদের অবস্থা দারুণ সঙ্কটাপন্ন। অন্যের উপর নির্ভর করে চলে এদের পরিবার। আজ নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
অনেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বরে ফোন দিয়ে গুছিয়ে বা বুজিয়ে বলতে না পারায় ও ম্যাসেজ দিতে না জানায় খাদ্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হয়ে আছেন অসহায় মানুষগুলো। জনপ্রতিনিধি ওয়ার্ড কাউন্সিলর এদের এখনও কোন খোঁজ নেয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তবে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এমন দৈন্যদশা থেকে অচিরেই মুক্তি পাবেন বলে আশাবাদী কর্মহীন এ পরিবারগুলো।
Leave a Reply